কিছুদিন পরে ইন্টারের পরীক্ষা এইদিকে আব্বা সবাইকে বলে বেড়াচ্ছে আমাকে নাকি বিয়ে করিয়ে দিবে তাও আবার নিজের বন্ধুর মেয়ের সাথে,মেয়েটা আমার থেকে এক বছরের বড়।ফারিয়া অাপু অনেক সুন্দর তাই বলে এই না আমার থেকে এক বছরের বড় একটা মেয়েকে বিয়ে করতে হবে।এইদিকে আব্বা বিয়ের সব অায়োজন শুরু করছে মানে কেনাকাটা করা শুরু করে দিয়েছে অলরেডি।আব্বা যখন খাবার টেবিলে খেতে আসে তখন সুযোগ পাই কারণ খাওয়ার সময় আব্বার মাথা ঠাণ্ডা থাকে,আমি বিরহবেদনা কণ্ঠে বলি-
.
_আব্বা একটা কথা বলি?
_হ্যাঁ বল।
_এই সময় বিয়েটা না করলে হয় না?
_কেন এখন কি সমস্যা?
_না সামনে ইন্টারের পরীক্ষা এখন বিয়ে করলে পড়ালেখার সমস্যা হবে।
_আরে কোনো সমস্যা নাই বিয়েতো দুই দিনের মধ্যেয়ে শেষ হয়ে যাবে।
.
আমার আব্বা কোনো মতে রাজি হচ্ছে না সেই আমাকে বিয়ে করাবে করাবে।কিন্তু মেয়েটা আমার থেকে বড় তাই আব্বাকে শেষবারের জন্য বলি-
.
_আব্বা আরেকটা কথা বলি?
_হ্যাঁ বল?
_ফারিয়া অাপু'তো আমার থেকে এক বছরের বড়।
_এই বেয়াদব ফারিয়া বল,আপু কেন বলিস সে তোর বৌ হবে কিছুদিন পরে।আর তোর মায়ের থেকেও তো আমি দশ বছরের বড় তাতে তো কোনো সমস্যা হয় নাই তাহলে তোর কি সমস্যা?
_আব্বা মেয়েরা সবসময় ছোট থাকে ছেলেরা বড় আপনি জানেন না?
_কে বলছে এই কথা?ছেলেরা ছোট হলে সমস্যা নাই,আমি আমার বন্ধুকে কথা দিয়েছি তোর সাথে তার মেয়েকে বিয়ে করিয়ে দিবো।
আব্বা শুধু নিজের ইচ্ছাটার কথা বলে, আমি আব্বার কথা শুনে রেগে গিয়ে বলি-
.
_আমি এই সতেরো বছর বয়সে বিয়ে করবো না তোমার ইচ্ছা হলে তুমি আরেকটা করো।
.
আমার আব্বা এই শুনে পঠাস করে দিলো আমার খালে একটা থাপ্পড়।আব্বার প্লেটের দিকে তাকিয়ে দেখি আব্বার ভাত খাওয়া শেষ তার মানে আব্বার মাথা এখন গরম কিছু না বলে দিলাম দৌড়।
.
এইদিকে যতদিন যাচ্ছে ততো বিয়ের দিন ঘনিয়ে আসছে।পৃথিবীতে মহাযুদ্ধ লাগলেও আমার আব্বা আমাকে বিয়ে করাবে।বিয়ের দিন আসলে আমি বিয়ে করতে যাবো না ফারিয়া অাপুর বাড়িতে বর সেজে যাবো না কিন্তু না!বিয়ের দিন আব্বা নিজের হাতে আমাকে বর সাজিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে আমাকে গাড়ীতে তুলে।প্রাইভেট কার সুন্দর সুন্দর ফুল দিয়ে সাজানো,বলতে হবে আমার আব্বার পছন্দ আছে। আমার পাশে আমার বন্ধু সাজিদ বসা,সাজিদ খিলখিল করে হাসতে হাসতে বলে-
.
_কাকা এখন শুধু রশি দিয়ে বেঁধে রাখছে সেখানে গিয়ে যদি কবুল না বলিস তাহলে জবাই দিবে।
.
সাজিদের কথা শুনে গলায় কেমন জানি শুকিয়ে আসছে আসলেই আমার আব্বা মানইজ্জতের জন্য জবাইও দিতে পারে।আমি সাজিদকে ফিসফিস করে বলি-
.
_সাজিদ আমার যায়গা হলে তুই বুঝতি বেদনার ফল কেমন হয়?
_আরে গাধা তোর আব্বা তো তোকে বিয়ে করাচ্ছে অামার আব্বা আমার চল্লিশ বছর শেষ হয়ে গেলেও বিয়ের কথা বলবে না।তাছাড়া ফারিয়া দেখতে সুন্দর তোর সমস্যা কি? বিয়ে কর বন্ধু বিয়েতে মজা আছে।
.
আসলেই কেউ আমার কষ্ট বুঝলো না অবশেষে ফারিয়া আপুকে বিয়ে করতে হলো আমায় এই না ফারিয়া আপু না শুধু ফারিয়া আমার বৌ ফারিয়া।আমার আব্বা সবচেয়ে খুশি অনেক টাকা খরচ করিয়ে আমাকে বিয়ে করিয়েছে আসলেই এমন আব্বা সবার কপালে জুটে না।
.
বৌ সেজে বাসরঘরে বসে আছে ফারিয়া, আমার এক বড় ভাই বলছে-মেয়েরা যতো সুন্দর হোক না কেন তবে বৌ সাজলে তাদের আরো সুন্দর কিউট লাগে।আমার বৌ ফারিয়া লম্বা ঘোমটা দিয়ে বসে আছে আজ বৌয়ের চাঁদমুখ খানা দেখবো। এই বলে যখন ফারিয়ার ঘোমটা তুলতে যাবো হঠাৎ আমার আব্বা কোম্বল সরিয়ে আমার পাঁচায় লাত্তি দিয়ে বলে-
.
_সকাল ৮টা বাজে গোয়াল ঘরের গরু কে বাহির করবে হারামজাদা?
.
অামি ঘুম থেকে তড়িঘড়ি উঠে ভয় ভয় কণ্ঠে আব্বারে বলি-
.
_আচ্ছা আব্বা যাচ্ছি।তবে আরেকটু পরে লাত্তি দিলে ভালো হতো।
অাব্বার লাত্তি খেয়ে মনে মনে ভাবতে থাকি-আমার বিয়ে করা আর হলো না।
.
.
অনুগল্প:স্বপ্নের বিয়ে।
.
মো:ইমরান হোসাইন।
Comments
Post a Comment