স্বামীর সংসারে বেশ সুখে আছি।অনেক দায়িত্বশীল অামার স্বামী।আমি যখন মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়ি তখন আমার স্বামী আমার কেয়ার করে,তখন মনে হয় আমি সবচেয়ে সুখী নারী।উনি কেয়ার করা থেকে তার শাসন আমার কাছে খুব ভালো লাগে।রেগে গিয়ে যখন বলে-"এখনো কি তুমি বাচ্চা নাকি যেই ঔষুধ খেতে মন চায় না?আমার স্বামী অামার কাছে অনেক প্রিয় তবে অদৌ কি অাল্লাহর কাছে উনি প্রিয় নাকি?উনার একটা অভ্যাস ছিলো উনি রমজানে সব রোজা রাখতো না ৩০ রমজানে উনি ১০,১২ টা রোজা রাখতো আর বাকিগুলো অাদায় করতো না।প্রতিবার উনি এমন করে আমি লজ্জায় কিছু বলি না।এবার রমজানেও সেই এমন করতেছে।গতকাল কাজ শেষ করে দুপুরে এসে সেই লুকিয়ে খাবার খেয়েছে।যদিও বেশি কিছু খায় না ফল আর পানি পান করে।
.
আমার স্বামীর এই কাজটা আমার পছন্দ না।আমার খুব কষ্ট লাগে,যখন লজ্জায় তাকে কিছু বলতে পারি না।আমার এক বড়অাফু ছিলো উনি হাফেজা।আমি এই বিষয়ে অাফুর সাথে অালোচনা করছি।আফু আমাকে মুচকি হাসি দিয়ে বলে-
.
_শুনো পারু,এটা তোমার দায়িত্ব।তুমি তাকে অাল্লাহর ভয় দেখাও।হয়তো সেই ভুল বুঝতে পারবে।আর তুমি জানো না স্বামী-স্ত্রী অামল যদি ঠিক হয় তাহলে জান্নাতেও তারা একসাথে থাকবে।নিশ্চয় অাল্লাহ্ তার ওয়াদা ভঙ্গ করেন না।তুমি কি সেটা চাও না-তোমার স্বামীর সাথে তুমি একসাথে জান্নাতে থাকো।
_জ্বি অাফু সেটা তো চাই।
_তাহলে তুমি চেষ্টা করো,তাকে বুঝাও।
_আচ্ছা অাফু।
.
আজ সেহরীর সময় আমার ৮ বছরের মেয়ে রাত্রি ও উঠেছে।আমার মেয়েটা প্রতিদিন সকালে উঠে কান্না করে কারণ রাতে তাকে সেহেরীর সময় ডাক দিয় না।প্রথম রোজা থেকে বলতেছে সেই নাকি রোজা থাকবে।এই ছোট বয়সে অদৌ কি রোজা থাকতে পারবে নাকি?হয়তো কষ্ট হবে।সবাই সেহেরী খেয়ে শুয়ে আছে।আমি আমার স্বামীকে বলি-
.
_একটা কথা বলি রাগ করবা না?
_হ্যাঁ বলো কি কথা?
_তুমি রমজানের সব রোজা থাকার চেষ্টা করবে নামাজ পড়বে নিয়মিত।
_আমি কি ইচ্ছা করে রোজা অাদায় করি না নাকি?কোম্পানির কাজে বাহিরে রৌদ্র কাজ করতে হয় তাই সব রোজা রাখতে পারি না।
_তুমি কি জানো সাধারণ রৌদ্রের থেকে জাহান্নামের অাগুন কত ভয়াবহ? একটু তো কষ্ট হবে।তার প্রতিধান অাল্লাহ তোমাকে দিয়ে দিবে।
.
অামার স্বামী এই শুনে চুপ হয়ে গেলো।সকালে কাজে চলে গেছে।আজ আমার মেয়েটাও রোজা রাখছে।আজ তার অনুভূতি অন্যে রকম অনেক হ্যাপি তবে কষ্ট হচ্ছে তার।দুপুরে আমার স্বামী কাজ শেষ করে বাড়িতে আসে।গতকাল কাজ শেষ করে এসে পানি আর ফল খেয়েছে তবে আজ কিছু খাচ্ছে না।যোহরের নামাজ আদায় করে উনি বসে আছে।ইফতারীর সময় হলে আমার মেয়েটা ইফতারি নিয়ে বসে আছে পেটে প্রচুর ক্ষুধা তবে খাচ্ছে না,কারণ একটাই অাল্লাহর ভয়।আমার স্বামী এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,শুধু চেয়ে চেয়ে দেখতেছে তার মেয়ের অনুভূতি কেমন?আজান দিলো সবাই একসাথে ইফতারী করছি।একসাথে ইফতার করা সবচেয়ে অানন্দের।ইফতার করে আমার স্বামী নামাজ পড়ে বিশ্রাম করতেছে।কাজ শেষ করে আমি যখন রুমে যাই তখন সেই আমাকে বলে-
.
_খুব ভালোবাসো তাই না?
_হ্যাঁ খুব,তবে হঠাৎ এমন কথা কেন?
_এই যে মৃত্যুর পরেও একসাথে থাকতে চাও তাই আমাকে শাসন করতেছো।
_হুম একসাথে থাকতে চাই যাও এখন মসজিদে তারাবীহ নামাজ পড়ে আসো।
.
অামার স্বামী মুচকি হাসি দিয়ে বলে-
.
_আচ্ছা যাচ্ছি।
.
স্বামী স্ত্রী সম্পর্ক এমন হওয়া চাই যেই সম্পর্কে অাল্লাহর রহমত সবসময় থাকে।অাল্লাহর রহমতের ছায়া তখন থাকবেন যখন অাল্লাহর দেওয়া অামল সঠিক নিয়মে পালন করবেন।
.
অনুগল্প:স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক।
.
মো:ইমরান হোসাইন "
Comments
Post a Comment